যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে লঙ্ঘন করে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে বলে ফিলিস্তিনি সূত্র এবং সংবাদ সংস্থা আল জাজিরা জানিয়েছে। রোববার (১৯ অক্টোবর) একাধিক স্থানে চালানো এই হামলায় কমপক্ষে ১১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজা সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে। এই ঘটনা ১১ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর সবচেয়ে গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা চুক্তিটির স্থায়িত্ব নিয়ে নতুন করে শঙ্কা তৈরি করেছে।
- নুসাইরাত শরণার্থী শিবির: আল-আউদা হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা হামলায় তিনজন নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলা যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ইসরায়েল বিমান হামলা চালায়। আহতের সংখ্যা নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।
- আজ-জাওয়াইদা এলাকা (কেন্দ্রীয় গাজা): আল-আকসা হাসপাতালের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, ইসরায়েলি হামলায় এই এলাকায় পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
- উত্তর গাজা: ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজা সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল নিশ্চিত করেছেন, ইসরায়েলি বিমান হামলায় আজ গাজাজুড়ে অন্তত ১১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তিনি জানান, বিমানবাহিনী একাধিক স্থানে হামলা চালিয়েছে, যার বেশিরভাগ লক্ষ্যবস্তু ছিল আবাসিক এলাকা। নিহতদের মধ্যে ছয়জন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন, যারা উত্তর গাজার একটি স্থানে একসঙ্গে অবস্থান করছিলেন।
দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে, তবে তারা এটিকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখিয়েছে। তাদের দাবি, হামাস যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট লঙ্ঘন করে ‘হলুদ সীমার’ ওপারে ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে।
- রাফাহ হামলা: ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সেনাদের ওপর হামাসের ‘অ্যান্টি ট্যাংক মিসাইল ও গুলিবর্ষণের’ প্রতিক্রিয়ায় তারা রাফায় বিমান হামলা চালিয়েছে।
- নেতানিয়াহুর অনুমোদন: ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শের পর তিনি এই সামরিক পদক্ষেপের অনুমোদন দিয়েছেন।
- সাধারণ লক্ষ্যবস্তু: আরেকটি বিবৃতিতে সেনাবাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে’ বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ চালানোর কথা স্বীকার করে।
ফিলিস্তিনি চিকিৎসা সূত্রগুলোর মতে, গত ১১ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এই নতুন হামলা পর্যন্ত গত দুই সপ্তাহে গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় আরও প্রায় ১৫০ জন আহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন হাসপাতালগুলোয় ১৮ জনের মরদেহ আনা হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় মোট ৬৮,১৫৯ জন নিহত এবং ১,৭০,২০৩ জন আহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 























