২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের গ্রুপ ড্র অনুষ্ঠানের মাত্র দুই দিন আগে, আর্জেন্টিনার বিশ্বস্ত গোলপোস্ট-প্রহরী এমিলিয়ানো ‘দিবু’ মার্তিনেজ শিরোপা ধরে রাখার বিষয়ে নিজের দৃঢ় প্রত্যয় এবং বাঁধভাঙা উত্তেজনার কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন। নিউইয়র্কের সুউচ্চ ‘সামিট ওয়ান’ স্কাইস্ক্র্যাপারে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি ইংল্যান্ড থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। সেখানেই তিনি দ্বিধাহীনভাবে ঘোষণা করেন যে, কাতার বিশ্বকাপের তুলনায় আসন্ন বিশ্বকাপ নিয়ে তিনি আরও বেশি রোমাঞ্চিত।
বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে দিবু বলেন, “শুধু আমি নই, যারা একবার বিশ্বকাপ খেলেছে, তাদের সবার পেটের ভেতরই একটা অদ্ভুত অনুভূতি কাজ করে, যা ব্যাখ্যা করা কঠিন।” তবে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই মহাযজ্ঞকে ঘিরে তার ব্যক্তিগত উত্তেজনা যে তুঙ্গে, সে কথা উল্লেখ করে তিনি আবারও শিরোপা উঁচিয়ে ধরার স্বপ্ন দেখছেন।
ক্লাব ফুটবলে দুর্দান্ত সময় কাটানো সত্ত্বেও মার্তিনেজ আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন যে, জাতীয় দলই তার কাছে সবকিছুর ঊর্ধ্বে। তিনি ব্যক্তিগত পুরস্কার বা ক্লাবের হয়ে শিরোপা জয়কে ‘কেকের ওপর আইসিংয়ের (বাড়তি সৌন্দর্য) মতো’ বলে অভিহিত করেন, কিন্তু জোর দিয়ে বলেন যে, তার পুরো ক্যারিয়ারের আসল এবং গভীরতম তৃপ্তি হলো আর্জেন্টিনার হয়ে মাঠে নামা। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দাঁড়ালে তার আত্মবিশ্বাস কতটা বেড়ে যায়, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যখন আমি জাতীয় দলের হয়ে খেলি, তখন মনে হয় আমার জালে বল ঢোকানো অসম্ভব। কারণ আমি জানি, আমার পেছনে পুরো দেশ এবং আমার পরিবার আছে।”
অনুষ্ঠানে কিংবদন্তি আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক সের্হিও গোয়কোচেয়া মার্তিনেজের সঙ্গে আলাপচারিতা করেন। ৩৩ বছর বয়সী এই তারকা নিজের ফিটনেস নিয়ে সম্পূর্ণ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। দিবুর মতে, তার শারীরিক গঠন ‘বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত’, যা তাকে টানা খেলার সুযোগ করে দেয়। তিনি তার পেশাদারী মনোভাব তুলে ধরে বলেন, তিনি কখনোই মৌসুমের শেষে বিশ্বকাপ আছে বলে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারেন না। তার ভাষায়, “আমাকে ৬০টি ম্যাচই এমনভাবে খেলতে হবে যেন সামনে বিশ্বকাপ নেই, তা না হলে ১০০ ভাগ পারফর্ম করা কঠিন।”
বর্তমানে ক্লাব ফুটবলে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন মার্তিনেজ। তার দল অ্যাস্টন ভিলা প্রিমিয়ার লিগে দারুণ সময় পার করছে এবং তার দুর্দান্ত সেভ ও নেতৃত্বের গুণে পয়েন্ট টেবিলের চারে অবস্থান করছে। লিগে তার দল এখন পর্যন্ত আর্সেনালের (৭ গোল) পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কম গোল (১৩ ম্যাচে মাত্র ১১ গোল) হজম করেছে, যা আসন্ন বিশ্বকাপের আগে তার অসাধারণ প্রস্তুতি এবং আত্মবিশ্বাসেরই প্রতিফলন।
নিজস্ব প্রতিবেদক 




















