০১:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
নির্বাচনী নিরপেক্ষতা বিতর্ক

সরকার নিরপেক্ষ, প্রশাসন তদারকি করবেন প্রধান উপদেষ্টা – আইন উপদেষ্টা

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ২২ অক্টোবর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন এবং এর আগের দিন ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁর দলের অবস্থান তুলে ধরেন।

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা এবং আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।তিনি দাবি করেন, বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার না চাইলেও অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে নিরপেক্ষ আচরণ আশা করেছে, এবং সরকার সেই অনুযায়ী কাজ করছে।রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্যের কারণে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে গেলে এই সংশয় কেটে যাবে।আইন উপদেষ্টা জানান, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে জনপ্রশাসনের সব কার্যক্রম এখন থেকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি ও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন, যা নির্বাচনের আগে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার একটি পদক্ষেপ বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করার বিষয়ে তিনি সেনাপ্রধানসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেন। তবে তাদের সাবজেলে রাখার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত বলে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে তাদের প্রত্যাশা তুলে ধরেন।বিএনপি দাবি করেছে যে অন্তর্বর্তী সরকারকে এখনই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা নিতে হবে। নির্বাচনের আগে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা সম্পর্কে জনগণকে আশ্বস্ত করা জরুরি। পাশাপাশি, সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় ব্যক্তি থেকে থাকেন, তবে তাদের তাৎক্ষণিক অপসারণের দাবিও জানিয়েছে বিএনপি।

এই ঘটনাবলী দেশের রাজনীতিতে দুটি বিপরীত অবস্থানের চিত্র তুলে ধরে। একদিকে আইন উপদেষ্টা সরকারে নিরপেক্ষতা দাবি করছেন এবং প্রধান উপদেষ্টার নিবিড় প্রশাসনিক তদারকির মাধ্যমে নির্বাচনী নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার বার্তা দিচ্ছেন। অন্যদিকে, বিএনপি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে তাদের ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের’ ভূমিকায় রূপান্তরিত হওয়ার এবং প্রশাসনের মধ্যে থাকা ‘দলীয় ব্যক্তিদের’ অপসারণের দাবি জানাচ্ছে। ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া’প্রধান উপদেষ্টার প্রশাসনিক তদারকির ঘোষণা নির্বাচনী অনিশ্চয়তার মধ্যেও একটি নির্দিষ্ট দিকে অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

স্বাধীনতার সুফল আমরা ঘরে তুলতে ব্যর্থ হয়েছি : মামুনুল হক

নির্বাচনী নিরপেক্ষতা বিতর্ক

সরকার নিরপেক্ষ, প্রশাসন তদারকি করবেন প্রধান উপদেষ্টা – আইন উপদেষ্টা

প্রকাশিত : ০২:৫৬:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ২২ অক্টোবর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন এবং এর আগের দিন ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁর দলের অবস্থান তুলে ধরেন।

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা এবং আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।তিনি দাবি করেন, বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার না চাইলেও অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে নিরপেক্ষ আচরণ আশা করেছে, এবং সরকার সেই অনুযায়ী কাজ করছে।রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্যের কারণে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে গেলে এই সংশয় কেটে যাবে।আইন উপদেষ্টা জানান, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে জনপ্রশাসনের সব কার্যক্রম এখন থেকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি ও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন, যা নির্বাচনের আগে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার একটি পদক্ষেপ বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করার বিষয়ে তিনি সেনাপ্রধানসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেন। তবে তাদের সাবজেলে রাখার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত বলে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে তাদের প্রত্যাশা তুলে ধরেন।বিএনপি দাবি করেছে যে অন্তর্বর্তী সরকারকে এখনই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা নিতে হবে। নির্বাচনের আগে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা সম্পর্কে জনগণকে আশ্বস্ত করা জরুরি। পাশাপাশি, সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় ব্যক্তি থেকে থাকেন, তবে তাদের তাৎক্ষণিক অপসারণের দাবিও জানিয়েছে বিএনপি।

এই ঘটনাবলী দেশের রাজনীতিতে দুটি বিপরীত অবস্থানের চিত্র তুলে ধরে। একদিকে আইন উপদেষ্টা সরকারে নিরপেক্ষতা দাবি করছেন এবং প্রধান উপদেষ্টার নিবিড় প্রশাসনিক তদারকির মাধ্যমে নির্বাচনী নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার বার্তা দিচ্ছেন। অন্যদিকে, বিএনপি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে তাদের ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের’ ভূমিকায় রূপান্তরিত হওয়ার এবং প্রশাসনের মধ্যে থাকা ‘দলীয় ব্যক্তিদের’ অপসারণের দাবি জানাচ্ছে। ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া’প্রধান উপদেষ্টার প্রশাসনিক তদারকির ঘোষণা নির্বাচনী অনিশ্চয়তার মধ্যেও একটি নির্দিষ্ট দিকে অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।