০১:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

অবৈধভাবে গুলিসহ বিদেশি পিস্তল রাখার দায়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকার দ্বিতীয় বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া অস্ত্র আইনের এই মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় সম্রাট পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতে এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

গ্রেপ্তার ও মামলা

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে র‍্যাব গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে নিয়ে তার কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, একটি পিস্তল এবং বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর চামড়া উদ্ধার করা হয়। বন্যপ্রাণীর চামড়া রাখার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।

পরের দিন, ৭ অক্টোবর, র‍্যাব-১-এর ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত ও বিচার

  • অস্ত্র মামলা: তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর র‍্যাব-১-এর উপপরিদর্শক শেখর চন্দ্র মল্লিক ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অস্ত্র মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন। এই মামলার বিচার চলছিল ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে।
  • মাদক মামলা: একই বছরের ৯ ডিসেম্বর র‍্যাব-১-এর এসআই আব্দুল হালিম মাদক মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। এই মামলার বিচার চলছে ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে।

মানি লন্ডারিং ও দুদক মামলা (বিচারাধীন)

এছাড়াও, সম্রাটের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আরও দুটি মামলা রয়েছে:

  • মানি লন্ডারিং মামলা: ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিআইডির উপপরিদর্শক রাশেদুর রহমান বাদী হয়ে রমনা মডেল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, সম্রাট কাকরাইলের ‘মেসার্স হিস মুভিজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে বসে বিভিন্ন এলাকায় ‘অবৈধ কর্মকাণ্ড’ চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ (আনুমানিক ১৯৫ কোটি টাকা) উপার্জন করেন। তিনি এই অর্থের উৎস গোপন করতে সহযোগী এনামুল হক আরমানের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় পাচার করতেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সম্রাট ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ৩৫ বার সিঙ্গাপুরে, তিনবার মালয়েশিয়ায় এবং আরও কয়েকবার অন্যান্য দেশে ভ্রমণ করেছেন।
  • অবৈধ সম্পদ মামলা: ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম সম্রাটের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। এই মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বিচারাধীন।
ট্যাগ :
জনপ্রিয়

স্বাধীনতার সুফল আমরা ঘরে তুলতে ব্যর্থ হয়েছি : মামুনুল হক

অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

প্রকাশিত : ০২:৪৩:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

অবৈধভাবে গুলিসহ বিদেশি পিস্তল রাখার দায়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকার দ্বিতীয় বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া অস্ত্র আইনের এই মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় সম্রাট পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতে এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

গ্রেপ্তার ও মামলা

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে র‍্যাব গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে নিয়ে তার কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, একটি পিস্তল এবং বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর চামড়া উদ্ধার করা হয়। বন্যপ্রাণীর চামড়া রাখার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।

পরের দিন, ৭ অক্টোবর, র‍্যাব-১-এর ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত ও বিচার

  • অস্ত্র মামলা: তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর র‍্যাব-১-এর উপপরিদর্শক শেখর চন্দ্র মল্লিক ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অস্ত্র মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন। এই মামলার বিচার চলছিল ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে।
  • মাদক মামলা: একই বছরের ৯ ডিসেম্বর র‍্যাব-১-এর এসআই আব্দুল হালিম মাদক মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। এই মামলার বিচার চলছে ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে।

মানি লন্ডারিং ও দুদক মামলা (বিচারাধীন)

এছাড়াও, সম্রাটের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আরও দুটি মামলা রয়েছে:

  • মানি লন্ডারিং মামলা: ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিআইডির উপপরিদর্শক রাশেদুর রহমান বাদী হয়ে রমনা মডেল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, সম্রাট কাকরাইলের ‘মেসার্স হিস মুভিজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে বসে বিভিন্ন এলাকায় ‘অবৈধ কর্মকাণ্ড’ চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ (আনুমানিক ১৯৫ কোটি টাকা) উপার্জন করেন। তিনি এই অর্থের উৎস গোপন করতে সহযোগী এনামুল হক আরমানের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় পাচার করতেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সম্রাট ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ৩৫ বার সিঙ্গাপুরে, তিনবার মালয়েশিয়ায় এবং আরও কয়েকবার অন্যান্য দেশে ভ্রমণ করেছেন।
  • অবৈধ সম্পদ মামলা: ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম সম্রাটের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। এই মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বিচারাধীন।