গুমের দুই মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করার মাত্র তিন দিনের মাথায় সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। অর্থাৎ, তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে আইনি লড়াই করবেন না।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

সরে দাঁড়ানোর কারণ: ভিডিও বার্তায় অ্যাডভোকেট পান্না এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের পেছনে দুটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছেন: ১. ফজলুর রহমানের পক্ষে অবস্থান: ট্রাইব্যুনালে সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এসেছে। পান্না সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি ফজলুর রহমানকে আইনি সহায়তা দেবেন (ডিফেন্ড করবেন)। ২. ট্রাইব্যুনালের প্রতি আস্থা প্রসঙ্গ: তিনি যুক্তি দেন, যে আদালতের প্রতি শেখ হাসিনার নিজেরই আস্থা নেই, সেই আদালতে তাকে ডিফেন্ড করা উচিত নয় এবং এটি অনৈতিক।

আনুষ্ঠানিক নিয়োগ প্রসঙ্গ: তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে, তিনি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগপত্র পাননি। যদি পান, তবে আনুষ্ঠানিকভাবেই তার অপারগতার কথা জানিয়ে দেবেন। আর না পেলেও তার সিদ্ধান্ত এটিই যে, তিনি আদালতে শেখ হাসিনার পক্ষে দাঁড়াবেন না।

জয়-পুতুলের পক্ষে লড়ার ঘোষণা: শেখ হাসিনার পক্ষে না লড়লেও, একই ভিডিও বার্তায় জেড আই খান পান্না দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনার দুই সন্তান—সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পক্ষে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

পূর্বের অবস্থান: এর আগে গত ২৩ নভেম্বর জেড আই খান পান্না সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এবং বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে শেখ হাসিনাকে তিনি আদালতে “যথাযথ প্রতিরক্ষা” (Proper Defence) দিতে চান। শেখ হাসিনা পলাতক থাকায় আদালত তাকে সরাসরি আইনজীবী হওয়ার অনুমতি না দিলেও, প্রসিকিউশনের প্রস্তাবে তিনি “স্টেট ডিফেন্স” বা রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হতে রাজি হয়েছিলেন।