ফিলিস্তিনের গাজায় যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। তবে এই রাজনৈতিক অস্থিরতা ও মানবিক সংকটের মধ্যেও ২৩ বছর পর মুক্তি পাওয়া এক ফিলিস্তিনি বন্দি এবং তার স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প বিশ্ববাসীর হৃদয় ছুঁয়েছে।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ও মানবিক সংকট:
- ক্ষয়ক্ষতি: গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৩০ জন আহত হয়েছেন। গত রোববার ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছে ৪৫ জন এবং আহত ১৫৮ জন।
- হামাসের নিন্দা: হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর এটিকে যুদ্ধবিরতির ‘স্পষ্ট ও ঘোর লঙ্ঘন’ এবং আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিকতার লঙ্ঘন হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে।
- যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলাকে ‘খুব বড় কিছু নয়’ বলে অভিহিত করে যুদ্ধবিরতি টিকে থাকার আশা প্রকাশ করেছেন। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে প্রকারান্তরে সমর্থন দিচ্ছে।
- হামাসের অঙ্গীকার: এমন পরিস্থিতিতেও হামাসের নেতৃত্ব যুদ্ধবিরতির প্রতি তাদের পূর্ণ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
ভালোবাসার প্রতীক: ২৩ বছরের অপেক্ষা:
- কারাবাস ও মুক্তি: ফিলিস্তিনি বন্দি আকরাম আবু বকরকে ইসরায়েলি বাহিনী ২৩ বছর আগে বন্দি করেছিল। মুক্তির পর কায়রোতে তার সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে তার পুনর্মিলন ঘটে।
- তালাক ও নীরব অপেক্ষা: বন্দি থাকাকালে আকরাম স্ত্রীকে সামাজিক বন্ধন ও কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে তালাক দিয়েছিলেন। কিন্তু তার স্ত্রী সেই তালাক মানেননি এবং দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে স্বামীর জন্য অপেক্ষা করেছেন।
- পুনর্বিবাহ: কায়রোতে আকরাম এবং তার স্ত্রী পুনরায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
- প্রতিরোধের বার্তা: এই ঘটনা ফিলিস্তিনি জনগণের অটুট মনোবল, বিশ্বাস ও ভালোবাসার প্রতীক। এটি প্রমাণ করে যে, ইসরায়েলি দমননীতি যতই কঠোর হোক, প্রতিরোধ কেবল অস্ত্রের নয়, এটি মানবিক বিশ্বাসেরও। এই পুনর্মিলন সমগ্র ফিলিস্তিনের প্রতিচ্ছবি—যেখানে নারীরা আশা হারান না, কারণ তারা বিশ্বাস করেন, অপেক্ষা কখনো বৃথা যায় না।
নিজস্ব প্রতিবেদক 





















